বাংলাদেশ বিমান 220



বাংলাদেশ বিমান 220
জি মোস্তফা
১৯৭৪ খ্রিষ্টব্দ ৫ই ডিসেম্বর সৌদির জের্দ্দা বিমান বন্দর থেকে ।সোনালী সকাল আটয় উড়াল দিয়েছিল । নব্য স্বাধীন বাংলার বিমান এয়ার লাইন্স ২২০।
দুই শত ষাট জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি উড়াছিল। তখন ভরত সাগড়ের মহাকাশে হঠাৎ করে বিমান গোন্ডগোল দেখা দিল। পাইলট দ্রুত্ব নিম্ম দ্বীপ দেখতে পেয়ে । বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করলে, ভুপৃষ্টের বিশ গজ উপর থেকে বিধস্ত হয়।
শ্রীলংকার পশ্চিমে অজানা কোন এক দ্বীপে সেই প্লেন দুঘটনার পতিত হল। বেচে যাওয়া পঞ্চাশ জন মানুষ অসহায় তার মধ্যে এক জন তরুণী মেয়ে । বয়স বাইশ বছর গায়ের রং কাঁচা হলুদ মিশ্রিত ধব্ ধবে। নাম তার গুলনাহার ---
তার সাথে আছে সম বয়সী চাচা, সৌদিতে থাকত । আজনবী হয়ে দেশে বেড়াতে আসছিল তারা । প্রাণ হারায় দুই শত দশ জন যাত্রী, বাকীরা দ্বীপে বুন্দিত্বের প্রহর গুনতে থাকল।
বেচে যাওয়া মানুষ গুলির মধ্যে প্রায়ই ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিল। এক জন মধ্য পরিবারের যুবক, নাম তার গালিব । বয়স আনুমানিক ত্রিশ বছর । দেশের বাড়ি বতর্মান জয়পুর হাট জেলার কালাই থানা । সৌদিতে গিয়ে ছিল চাকরি করতে।
তির বছর পর ছুটি কাটাতে বাড়িতে আসছিল সে । এই পরিনতীর মানবেতর , পরিস্থিতীর শিকার হয়ে। একদিন ঘোষণা করল । তাকে যদি সবাই বিশ্বাস আর সহযোগিতা করে। তাহলে সে একটি যুক্তির পথ বেড় করতে পারে।গালিব এ কথা বলায় কেউ তাকে সাহায্য করলনা।
বরং গ্যায়ো ছোট লোক বলে গালি দিল , আর সমদ্রের বারি রাশি ঢেয়ের পাল তোলা জাহাযের পালে নিরাশার পালক ফেলতে থাকলে । কোনো সময় জাহাযের নিশানা, দেখা যায় কি না।
অনেকে আবার পতাকা উত্তলোন করল। গালিব একদিন প্লেনের ধবংস স্তুপ খুঁজে খুঁজে কিছু তার সংগ্রহ করল।
সেই তার এ্যালুমিনিয়ামের পাতের উপর পাকাতে লাগল । এমন সময় গুলনাহার এসে গালিবকে বলল। এসব কি করছেন?
জীবন বাচাতে সবাই পতাকা উত্তোলন করছেন, আর আপনি ছেলে মানুষি খেলা খেলছেন। গালিব বলল গুলনাহার ? আসলে সৌদিতে আমি লেবার সেক্সনে কাজ করেছি। তাই আমার কথায় কউ কান ‍দিল না । তাই  নিজের কাজ কেবল নিজেই করছি। বিশ্বাস কর গুলনাহার ।
আমি সবাইকে বাচাতে চাচ্ছি ? এই দেখে তোমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কি সব বলছি। আমি ঐ বিধস্ত প্লেন থেকে কিছু ইন্ডাক্টর বা তামার তার খুজে পেয়েছি।
তা থেকে ট্রান্সফারমার তৈরি করব। গুলনাহার বলল , সেইটি দিয়ে কি হবে? গালিব বলল আমার লেগেজের ভিতরে ৫৪৩ মডেলের , একটি ষ্টেপ রেকর্ডার আছে।
আমি সেইটি কে দিয়ে বেতার যন্ত্র বা পাচার কেন্দ্র তৈরি করব। সম্প্রচার করব, আমাদের বেচে থাকা আর বুন্দি দশার কথা ।
তবেই হয় তো আমাদের মুক্তি মিলতে পারে । যদি তুমি এ কাজে আমাকে একটু সাহায্য করতে পার । তাহলে কাজটি অনেক সহজ হবে। গুলনাহার বলল আপনি নিশ্চিত যে , এই কাজের সফলতা পাবেন?
একটু আগে বললেন লেবারের কাজ করেন । আপনি দেশে কি করতেন? গালিব বলল আমি অনেক আশাবাদী সফলতা পাব। আমি দেশে রেডিও সার্ভিসিং এর কাজ করতাম।
আমি গ্রাহক যন্ত্রের উপর বেশ কয়েক বার থিউরিকাল করেছি। তাতে সফলতা পেয়েছি। এখন আমার কাজের বিষয় হচ্ছে , হাই ফ্রিকোয়েন্সীর একটি পাওয়ার এ্যামপ্লিফায়ার তেরি করা। যার কাজ হবে আমাদের কথা গুলি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী আকরে তীরের মানুষ গুলির গ্রাহক যন্ত্রের পৌছে দেয়া ।
গুলনাহার বলল আপনি এত বড় জ্ঞানের অধিকারী । আর এখানকার কেউ আপনার কথায় কণর্পাত করলনা । আমি আপনার এই প্রয়াসের কথা এখনি সবাইকে বলে দিচ্ছি ।
দেখবেন আপনার এই কাজের সাহায্যে সবাই এগিয়ে আসবে। আপনাকে ভালও বাসবে।
গালিব বলল না গুলনাহার ।
তুমি একথা বলতে যেওনা । আমি যদি কাজের সফলতা না পাই। তাহলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। বলবে তাদের জীবন নিয়ে আমি নাটক করছি।
গুলনাহার শুধু তমি কি আমার পাশে থাকবে।
যদি থাক তাহলে একথা কাউকে বলনা । তার পর গুলনাহার গালিবের তাবুতে আসা যাওয়া করে। গবেষণার কাজে কিছুক্ষণ সময় কাটায়। পনের ষোল দিন কাজ করার পর। তোর কেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষের পথে । এমন সময় একটি গোন্ডগোল বেধে গেল।
বুন্দিত্বের কয়েক দিনের পরিচায় আজিজ নামের এক যুবক গুলনাহারের দিকে ভালবাসার হাত বাড়ায় ।
এই বিপদের দিনে গুলনাহার তাকে সত্যিকারের মানুষ না ।ভেবে প্রেম প্রত্যাখান করে।তাই সে গুলনাহারের চাচা হাবিবকে মিথ্যা বলে। গুলনাহার আর গালিবের কুৎসা রটায়। হাবিব এবার সবাইকে ডেকে বিচার বসাল। বিচারে গালিবকে দন্ড দেওয়া হল ও পিটানো হল বে ধরক, নিষেধ করা হল , গালিবের তাবুতে গুলনাহার আর যেন আসা যাওয়া না করে।
এসময় ও গুলনাহার বেতার আবিষ্কারের কথা কাউকে বলল না । বরং বলবে পীড়িতে এতই মজেছে যে শেষে গুলনাহারের মাথায় ভূত চেপে বসল। দ্বীপের এক একটা ‍দিন এক যুগ বলে মনে হতে লাগল। দিনের বেলা সকলে উদ্বারের প্রচেষ্টায় রত। রাত এলে কান্নায় রোল কে বাচাবে কে নিয়ে যাবে। বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে দেশে।একদিন গালিব দ্বিপের জঙ্গল থেকে একটি লম্বা বাশ সংগ্রহ করে এন তাবুর সামনে এন্টিনা টাঙ্গাল । আজ গালিব কিছুটা ব্যস্ত . মনের কথা বলার মত এখানে তার কোন বন্ধু নেই” যদি ও গুলনাহার কে পেয়েছিল...............
কাজের জন্য তাকেও হারাল।
গুলনাহার কি ভাবে জানবে তার প্রচার যন্ত্র বানানোর কাজ শেষ । অল্প কিছু ক্ষনের মধ্যে সম্প্রচারিত সংবাদ বুলেটিং , সাগরের আকাশ বাতাস আর বায়ু মন্ডল ভেদ করে . তীরের মানুষ গুলির গ্রাহক যন্ত্রে বেজে উঠবে। ইতস্ত : গুলনাহারকে এখন খুব প্রয়োজন। গুলনাহার ইংলিশ জানে আমরা কোথায় আছ । আমাদের প্লেন কোথায় দূঘটর্নায় কবলে পড়েছে সে কথা গুলি ইংরেজিতে বলার দরকার।
কিং কতব্য বিমূঢ় গালিব তাকে ডেকে আর ঝগড়া বাধাতে চায়না । রাত ঘনিয়ে এল দশটার দিকে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যেতেই তার প্রথম সম্প্রচারের কাজ শুরু কারল।
৫৪৩ মডেলের ষ্টেপ রেকর্ডার কে প্রেরক যন্ত্র আর কিছু পাটর্সের সমন্বয়ে একটি ট্রান্সফরমার লাগিয়ে পাওয়ার এ্যামপ্লিফায়ার প্রস্তুত করল। ছোট একটি মুভিং কয়েল কে মাউথপিস বানিয়ে, কথা বলতে শুরু করল । হ্যালো...হ্যালো..? আমি বিধস্ত বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ২২০ এর যাত্রী কথা বলছি। আমরা পঞ্চাশ জন যাত্রঅ বেচে আছ। নাম না জানা দ্বীপে মানবেতর জীবন কাটাছি।আমাদের দয়া করে উদ্ধার করুন । এই ভাবে সারারাত সম্প্রচার হল। অন্য তাবুর মানুষগুলি গালিবকে পাগল আর ছেলে খেলা ভাবল। কেউ কেউ হুশিয়ার করল রাতের বেলা পাগলের প্রলাপ না বলে , আল্লাহকে ডাক?
আর আমাদের মতাদর্শের সাথে মিশতে না পারলে বা মিশতে যদি তোমার জাত যায় তাহলে ভেলা তৈরি কর? সমুদ্রের পথে পা বাড়াও তারপর রাত পোহায়ে দিন এল।
এক ঘন্টা পরপর গালিব তার সম্প্রচারিত কথা গুলি প্রচার করছে। গুলনাহার এবার ভয়কে তুচ্ছ মনে করে ছুটে এল । জানলো বেতার সম্প্রচারের কথা ।
গালিব জানাল সম্প্রচারিত কথা গুলি যদি ইংরেজিতে বলা যেত , তাহলে সফলতার ফল দ্রুত্ব পাওয়া যেত। গুলনাহার তখন মাউথপিস হাতে নিয়ে ইংরাজীতে কথা বলতে লাগল।
পালা বদল করে বাংলা আর ইংরেজীতে বুলেটিং প্রচার হতে থাকল । একদিন পর গুলনারের বিরুদ্ধে আপত্তি কর কথা প্রচার করতে লাগল আজিজ। বিপদের দিনে প্রেম খেলা হচ্ছে গালিবের তাবুতে। গুলনাহার ভদ্রতা বজায় রেখে বলেদিয়েছে , গালিবের সাথে মিলামিশা প্রেম নয়। এই দ্বীপ থেকে আমাদের সকলের মুক্তির প্রয়াস।গালিব বেতার যন্ত্র তৈরি করেছে । আমরা কোথায় আছি বেচে আছি । আমাদের মুক্ত হওয়ার জন্য , এই সংবাদ গুলি প্রচার করছি।এর নাম যদি প্রেম খেলা হয় তাতে আমার জায় আসেনা।হাবিব ইত মধ্যে সাবাস দিয়েছে গুলনাহার কে আর সবাইকে বলেছে গালিব আ গুলনাহারের প্রচেষ্টায় মুক্তির উত্তম পথ।
সত্যি তীরের মানুষ গুলিকে আমাদের বিপদের কথা জানাতে হবে।এভাবে পনের দিন ধরে বেতার প্রচারের কাজ চালানো হল। কোন ফল হল না।গালিবের সাথে গুলনাহারের মিলামিশা আজিজের সহ্য হচ্ছে না ।
তাই গোলমাল পাকাল কয়েক জনকে বাগে নিয়ে বিদ্রোহ শুরু করল। আর গালিবের প্রচার তরঙ্গ কে মিথ্যা ধোকা বাজি মনে করল।তাদের কথা আমরা ধনাঢ্য উচু শ্রেণীর শিক্ষিত মানুষ গুলি এই গ্যায়োভুত আর, কূট কৌশুলি মানুষকে প্রভুত্ব জ্ঞানি ভাবি।
সে এখানকার নেতা হক , তাহলে গুলনাহারের সাথে ফসটি নসটিতে কেউ কথা বলতে সাহস পাবেনা । ভেঙ্গে ফেল মিথ্যা বেতার কেন্দ্র । দ্বীপে হৈ,চৈ পরে গেল। সবাই বেধে পড়ল সংকটের জিন্জিরে। বিপদ সহুর্তো ভুলে গেল অনেকেই জড়িয়ে গেল স্বাথের হানা হানিতে।
এসময় গুলনাহার গালিবকে বলল, আপনার প্রচার কেন্দ্র কাজ করছে কি না ? ওরা সবাই অবিশ্বাস করছে।গালিব বলল মনে হয়. একটু সমস্যা হয়েছে। এখানে তো ফ্রিকোয়েন্সীর ওয়েভ ল্যাংথ, সাইকল্থ মিটার এবং ওয়াট পরিমাপক যন্ত্র নেই। যাই হোক এখন থেকে সটওয়েভে তরঙ্গের মডুলেশন সম্প্রচার করব। এতে ক্যারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সীর কিছুটা রদ বদল হয়তো বা করতে পারে। তার আগে চল প্লেনের ধ্বংস স্তুপ খুজে খুজে কোন ড্রাইসেল পাওয়া যায় কিনা।
তার পর ধ্বংস স্তুপ খুজে ড্রাইসেল পাওয়া গেল । সংবাদ পূবের মত প্রচার হতে থাকল। এমনি ভাবে আবার কয়েক দিন কেটে গেল্
একদিন দুপুর বেলা আজিজ তার কয়েক জন সহপার্টিকে নিয়ে গালিবের তাবুতে প্রবেশ করল। গালিবকে বেধরক মারধর করতে লাগল। গুলনাহারের হাত থেকে মাউথপিস ফেলে দিয়ে তাকে টেনে হিচড়ে তার চাচার তাবুতে পাঠাল।
আর বলল ঐ শয়তানটির সব কিছু আজ ভেঙ্গে ফেলব। হাবিবের বেতার কেন্দ্র ভেঙ্গে ফেলার মত ছিল। কারণ গালিবের প্রচেষ্টা বিফল ও একটা পাকা ধোকা বাজ , শুধু গুলনাহারের মাথা নষ্ট করছে ।এই সব কথা বলে গুলনাহারের চাচাকেও আজিজ তার দলে নিয়েছে । এবার গুলনাহার ছাড়া সবাই সিদ্ধান্ত নিল বেতার কেন্দ্র ভেঙ্গে ফেলবে। কথা কাজে এক হল। সকলে এগিয়ে এল বেতার  কেন্দ্রে দিকে । প্রথমে এ্যান্টিনা ভেঙ্গে ফেলা হল। তারপর ষ্টেপ রেকডারকে ভূপৃষ্টে আছাড় মেরে পদ পিষ্ট করা হল। গালিব ফ্যাল ফ্যাল চোখে চেয়ে রইল। যৌথ শক্তির কাছে হাড় মানল, ওরা বড় অফিসার বড় শিক্ষিত মানুষ। তবে কি সত্যি বেতার কেন্দ্রের কোন কাজ হয়নি।এ্যামপ্লউচউড় মডউলেশন, ফ্রিকোয়েন্সী মডউলেশন। দুটোয় ক্যারি করেছে।তাহলে মডউলেশনে কি অসিলেটর ক্যারিয়ার ফ্রিকোয়েন্সী উৎপন্ন্য হয়নি?
তাই নিজে নগন্য আ অপ্লশিক্ষিত ভেবে কোন প্রতিবাদ করলনা। বিক্ষিপ্ত তাবুর ভিতরে নত জানু হয়ে বসে পড়ল । গুলনাহার বড় মর্মাহত  হলো । গালিবের প্রতিভাকে কেউ মুল্যায়ণ করলনা কেন? মানুষ কম শিক্ষিত আর গরীব হলে তার ভিতরে কি সৌন্দয্য  আর বুদ্ধিমত্বা থাকে না?
এখন গালিবের লজ্জা ধিককার অপমানের চিন্তা ভাবনায়. বেলা দ্বিপ্রহর হল। এমন সময় দূর আকাশে হেলিকাপটারের শব্দ শোনা গেল । সবাই অবাক দৃষ্টে তাকাল আকাশ পানে ধেয়ে আসছে পাখির মত ডানা মেলে কালো মিছমিছে হেলিকাপ্টার ।
গুলনাহার চিৎকার করে গালিবের তাবুতে যেয়ে বলল। কংগ্রাজুলেশন গালিব বাহিরে আসুন দেখুন > আপনি র্সাকসেচ হয়েছেন।
আমাকে বলতে হবে আজ অনেক কথা । গালিব গলিনাহার তাবুর বহিরে এল, গুলনাহার সকলের উদ্দেশ্যে বলল। আপনারা সবাই শুনে রাখুন ।
আমাদের প্রচার তরঙ্গের বুলেটিং নিশ্চয় তীরের মানুষ শুনেছেন্ তারা আমাদের খুজছেন. এখন ফ্লাগ উত্তোলন করে দিক নির্দেশনা দেওয়া দরকার। সবাই মিলে ফ্লাগ উত্তোলন করল। হেলিকাপ্টার দ্বীপের নিম্ম আকাশে এস গেল। এলাউন্স করতে লাগল ইংরেজিতে যার বাংলা অনুবাদ আপনারা কি বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ২২০ এর যাত্রী?
আমরা শ্রীলংকার রেভক্রিসেন্ড সোসাইটির পক্ষ থেকে আপনাদের উদ্ধার করতে এসেছি। আপনারা যে সংবাদ বুলেটিং প্রচার করেছিলেন তা শ্রীলংকা বাসি শুনেছে। বাংলাদেশ সরকারে কাছে দূত প্রেরণ করা হয়েছে। সিগ্রই আমরা আতরণ করছি।
আনন্দে গুলনাহার এবার গালিবকে জড়িয়ে ধরে। ঠোটে গালে চুমু দিতে লাগল। এ সময়  কেউ আর তাকে কিছু বলল না। সবার মুখে বেচে থাকার হাসি আনন্দ।পঞ্চাশ জন মানুষের মধ্যে গালিব এখন সবার উপরের মানুষ । তার মেধা বুদ্ধি বলের তুলনা হয়না। যারা ভুল বোঝেছিল অসভ্য গ্যায়ো ছোট লোক ধোকাবাজ ভেবেছিল। তার আজ সত্যিকারে বিবেকের কাছে মাথা নোয়াল। গুলনাহার গালিবের বুকে মাথা রেখে বলল, জীবিত মানুষের আপনার সাথে আমার প্রেম ছিলনা , আপনার প্রতি আমার পরিচয় ছিলনা । কিন্তু এখানকার মানুষ মিথ্যে বলে , আপনার প্রতি প্রেমের সৃষ্টি আর আবেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এবার গুলনাহার দ্বীপের আটক সকলের উদ্দেশ্যে বলল। শুনন আপনারা ( এ সময় মাথার উপর দিয়ে হেলিকাপ্টার বার বার পাক দিয়ে যাচ্ছে ) আপনারা ভেবেছিলেন আমি গালিব সাহেবের , এই দুর্দিনের বিপণ্য জীবনে প্রেম করছি মজা করছি। এখন প্রমান দেখুন ?
তার বেতার যন্ত্রের প্রচার কাজ সফল হয়েছে। তার প্রচার বুলেটিং শ্রীলংকাবাসি শুনেছে। আর আপনারা কিনা সেই যন্ত্র ভেঙ্গে ফেললেন। ছি, ছি, আপনাদের মন প্রবৃত্তি এত নীচু হতে পারে। এ সময় আরো কিছু হেলিকাপ্টারের আবির্ভাব হল। গুলনাহার আনন্দে দিশে হারা বুক ফাটা কন্ঠে বলল , আমি গালিবকে এখন সত্যিকারে ভালবাসি। প্রেম নিবেদন করছি সবাই খোলা চোখে দেখুন।তার বুকে মাথা রাখছি।বলেই পুন্য গালিবের বকে মাথা রাখল। কেউ কোন কথা বললনা , প্রতিবাদ করলনা । কারণ গালিবের কর্ম্য ছিল সকলের স্বার্থে । প্রমাণ হল গুলনাহারকে তার পাশে রেখেছিল গবেষণার সাহায্যে । এখন তার বুকে গুলনাহারে মাথা । তাহলে কি প্রেম ? দ্বীপের সমতলে আস্তে আস্তে সব হেলিকাপ্টার অবতরণ করল। যাত্র্রীদের যথারীতি সময়ে হেলিকাপ্টারে উঠে আসতে বলা হল । একে একে সবাই উঠল গুলনাহার গালিব ছাড়া।
কিছুক্ষন ইতস্তত করে গুলনাহার গালিবকে বলল।চলুন উঠে পড়ি।তখন গালিবের চোখ বেয়ে আনন্দের অশ্রু ধারা গড়িয়ে পড়তে লাগল।
গুলনাহার তার নিজ হাতে পানি মুছে দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে হেলিকাপ্টারে উঠল। দ্বীপ ছেড়ে হেলিকাপ্টারের বহড় উড়াল দিল, কলম্বের উদ্দেশ্যে।

সমাপ্ত
বাংলাদেশ বিমান 220 বাংলাদেশ বিমান 220 Reviewed by Unknown on 5:28 PM Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.